বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪
প্রথম পাতা » আইসিটি সংবাদ » সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ খাতের উদ্যোগ হুমকির মুখে
সফটওয়্যার ও স্টার্টআপ খাতের উদ্যোগ হুমকির মুখে
চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হচ্ছে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সার্ভিস খাতে আয়কর অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ।জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এই অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধি না করলে হুমকির মুখে পড়বে সম্ভবনাময় এই খাতের বিকাশ। এতে সরকারের ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনা বাস্তবায়নও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গত ২৪ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘ট্যাক্স পলিসি সাজেশনস ফর প্রমোটিং লোকাল টেক স্টার্টআপস’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল আলোচনায় এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দেশের ২০টি উদীয়মান স্টার্টআপ উদ্যোক্তা, স্টার্টআপ সেক্টরে বিনিয়োগকারী বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ট্যাক্স বিশেষজ্ঞ ও বেসিসের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, আমাদের পাশর্^বর্তী দেশগুলোতে টেকনোলজি খাতে নতুন স্টার্টআপ বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে উদ্যোক্তাদের অনেক ধরণের প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি কর অব্যাহতি এইরকম প্রণোদনার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর। আমাদের দেশেও গত ৫ বছরে টেকনোলজি স্টার্টআপ সেক্টরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে। এই বছরের জুন মাসের পরে যদি কর অব্যাহতি সুবিধা তুলে নেওয়া হয়, তাহলে একদিকে যেমন বিনিয়োগ কমে যাবে, অন্যদিকে সফটওয়্যার রপ্তানির অনেক টাকা দেশে না আসার শঙ্কা তৈরী হবে, যাতে আরো চাপ পড়বে দেশের ডলার রিজার্ভের উপর।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী সরকার আইসিটি খাতে কর অব্যাহতি বাবদ প্রতি বছর প্রায় ১৪৭০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এই হিসাবে এই খাতের কোম্পানিগুলো বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার লাভ করছে। তিনি বলেন, এই হিসাব কোনোভাবেই বাস্তব চিত্রের প্রতিফলন না। বর্তমানে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবার ৫ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা মিলিয়ে বছরে সর্বোচ্চ ১,০০০ কোটি টাকা মুনাফা করে যা থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ কোটি টাকা সরকার পাবে কর অব্যাহতি সুবিধা তুলে নিলে। তিনি রাজস্ব বোর্ডের কাছে আহবান করেন যাতে কোম্পানি লেভেলে জরিপ করে এই সেক্টরের প্রকৃত মুনাফার হিসাব নিরূপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান বলেন, সরকার ইতোমধ্যে যে সকল পলিসি সাপোর্ট তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দিয়ে আসছে তার সুফল সবেমাত্র আসা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, কর অব্যাহতি অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত থাকুক সেটা এই খাতের কেউই চায় না। তবে এখনই তুলে নিলে সরকার অতি স্বল্প মেয়াদে যে পরিমান সামান্য অতিরিক্ত কর পাবে, তার থেকে বেশি কর হারাবে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে। এছাড়া অনেক উদ্যোক্তা দেশে ব্যবসা করা ছেড়ে বিদেশে গিয়ে ব্যবসা শুরু করবে, যাতে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হবে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি সামিরা জুবেরী হিমিকা, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এসোসিয়েশনের পরিচালক শওকত হোসেন, পলিসি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইআইডি’র প্রধান সায়ীদ আহমেদ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্টার্টআপ ব্যবসা ও ট্যাক্স বিশেষজ্ঞ স্নেহাশীষ বড়ুয়া। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।