বৃহস্পতিবার ● ৫ জুলাই ২০১২
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গুগলের ট্যাবলেট আর বিস্ময় চশমা
গুগলের ট্যাবলেট আর বিস্ময় চশমা
মাইক্রোসফটের ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে গুগলও ট্যাবলেট কম্পিউটার নিয়ে আসার ঘোষণা দিল। এছাড়া ২০১৪ সালের শুরুতেই ‘বিস্ময় চশমা’ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে গুগল।
আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোতে সম্প্রতি গুগলের একটি সম্মেলন হয়। সেখানে একের পর এক নতুন পণ্যের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ট্যাবলেট কম্পিউটার একটি। গুগলের এই ট্যাবলেটের নাম ‘নেক্সাস-৭’। দাম আইপ্যাডের অর্ধেক। ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, কানাডা আর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের জন্য অনলাইনে নেক্সাস-৭’র অর্ডার দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে গেছে। তবে পণ্যটি হাতে পাওয়া যাবে জুলাই মাসের মাঝামাঝি। আর দাম পড়ছে ১৯৯ ডলার। অ্যামাজনের ট্যাবলেট ‘কিন্ডল ফায়ার’ও বিক্রি হচ্ছে এই দামে।
নেক্সাস-৭ গুগলের হলেও এটা আসলে তৈরি করেছে তাইওয়ানের আসুস কোম্পানি। ৩৪০ গ্রাম ওজনের এই ট্যাবলেটে থাকছে একটি ক্যামেরাও। অন্যান্য সুবিধা ছাড়াও গেম খেলার জন্য এই ট্যাবলেটটি বেশ দারুণ হবে বলে জানানো হয়েছে। নেক্সাসের আকার ‘কিন্ডল ফায়ার’ আর স্যামসাংয়ের ‘গ্যালাক্সি ট্যাবে’র মতো।
২০১০ সালে অ্যাপলের আইপ্যাডের পর যে ট্যাবলেট যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তাতে সম্প্রতি যোগ দিয়েছে মাইক্রোসফট। মাত্র সপ্তাহ খানেক আগে তারা ‘সারফেস’ নামে তাদের ট্যাবলেট কম্পিউটারের ঘোষণা দেয়। অবশ্য তার দাম এবং কবে এটি পাওয়া যাবে, সেটা জানানো হয়নি। মাইক্রোসফটের সারফেস নিয়ে ইতোমধ্যে প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে উত্সাহ দেখা গেছে। অনেকে মনে করছেন, এতদিন পরে আইপ্যাডের একটা শক্ত প্রতিপক্ষ পাওয়া গেল। তবে সারফেসের দাম আইপ্যাডের সমান হতে পারে বলে একটা ধারণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। সে তুলনায় গুগলের নেক্সাসের দাম অর্ধেক।
প্রযুক্তি বিশ্লেষক ফ্রাঙ্ক গিলেট গুগলের নেক্সাস সফল হবে কি-না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে নেক্সাস উপযোগী অ্যাপ পাওয়া নিয়ে। গুগল কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করবে সেটা জানায়নি। গিলেট বলেন, অ্যামাজনের ‘কিন্ডল ফায়ারে’র দামের সমান হবে নেক্সাস। তবে তার ধারণা, অক্টোবরের মধ্যেই অ্যামাজন তাদের ট্যাবলেটের অনেক উন্নয়ন ঘটাবে।
আইপ্যাডের প্রতিদ্বন্দ্বী আনলেও আইপ্যাডে ব্যবহার করা যায় সে ধরনের ইন্টারনেট ব্রাউজারও নিয়ে এসেছে গুগল। জনপ্রিয় ‘গুগল ক্রোম’ ব্রাউজারটিকেই আইফোন ও আইপ্যাডে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। এখন থেকে এটা ‘অ্যাপ স্টোর’-এ পাওয়া যাবে বলেও জানিয়েছে গুগল।
এবার গুগলের ‘বিস্ময় চশমা’ প্রসঙ্গ। গত এপ্রিলে গুগল এই চশমার কথা জানিয়েছিল। এ নিয়ে তারা একটি সোয়া দুই মিনিটের ভিডিও প্রকাশ করে। গুগল তখন বলেছিল, তারা এই চশমা আরও উন্নত করতে চায়। তাই সবার কাছ থেকে মতামত জানতে সম্ভাব্য চশমার একটা ধারণা দিতে ভিডিওটি তৈরি করা হয়। এতে দেখা যায়, একজন ব্যবহারকারী তার চোখে থাকা চশমা দিয়েই দৈনন্দিন অনেক কাজ সেরে ফেলছেন। যেমন ঘুম থেকে উঠে চশমাটা পরতেই ব্যবহারকারীর চোখের সামনে চলে আসে নানান তথ্য। আজকের তাপমাত্রা কত, বৃষ্টি হবে কি-না ইত্যাদি। এমনকি ওই ব্যক্তির আজ কোথায় কোথায় যাওয়ার কথা, সেই তালিকাটাও জানিয়ে দেয় চশমাটি। পথঘাট চেনা, বইয়ের দোকানে গিয়ে নির্দিষ্ট বই খুঁজে বের করা, অনলাইনে কনসার্টের টিকিট কেনা ইত্যাদি কাজও করা যায় ওই চশমার মাধ্যমে এবং সেটা চোখে পড়া অবস্থাতেই। এজন্য হাত ব্যবহারের প্রয়োজনও হয় না। হাঁটতে হাঁটতেই এসব কাজ করা সম্ভব এই বিস্ময় চশমার মাধ্যমে। দিন শেষে ওই চশমা ব্যবহারকারীকে দেখা যায় তার বান্ধবীর সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করতে। সে সময় সে চশমা দিয়েই বান্ধবীটিকে সূর্যাস্তও দেখায়।
সানফ্রান্সিসকোর সম্মেলনে উপস্থিত কম্পিউটার প্রোগ্রামারদের কাছে গুগলের এই চশমার প্রোটোটাইপ বিক্রি করা হয়েছে ইতোমধ্যেই। তবে তারা সেটা হাতে পাবেন আগামী বছরের শুরুতে। এজন্য প্রত্যেক প্রোগ্রামারকে দেড় হাজার ডলার গুনতে হয়েছে। গুগল আশা করছে, এই প্রোগ্রামাররা চশমাটি ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেবেন। সেগুলোর ওপর ভিত্তি করেই সাধারণ মানুষের জন্য চশমা তৈরি করা হবে। এবং ২০১৪ সালের শুরুর দিকে সেটা বাজারে ছাড়া হতে পারে। কিন্তু এই বিস্ময় চশমার দাম কত হবে? গুগল কোনো নির্দিষ্ট দাম না বললেও এটা নিশ্চিত করেছে যে, দাম স্মার্টফোনের চেয়ে বেশিই হবে। সূত্র : ডিডব্লিউ