বুধবার ● ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » বাংলাদেশে দ্রুত বিকাশ লাভ করছে ডিজিটাল অর্থনীতি, সব ধরনের সহযোগিতা করবে যুক্তরাজ্য।
বাংলাদেশে দ্রুত বিকাশ লাভ করছে ডিজিটাল অর্থনীতি, সব ধরনের সহযোগিতা করবে যুক্তরাজ্য।
ডিজিটাল অর্থনীতিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থানকে সুসংহত করতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য সফররত বাংলাদেশের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ডিজিটাল, সংস্কৃতি, মিডিয়া ও ক্রীড়ামন্ত্রী ম্যাট ওয়্যারম্যান দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে এমন প্রতিশ্রুতি দেন।
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা শহিদুল আলম মজুমদারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়ে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ওয়েস্টমিনস্টারে আয়োজিত বৈঠকে দুই মন্ত্রী উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী ম্যাটকে জানান, বাংলাদেশে দ্রুত বিকাশ লাভ করছে ডিজিটাল অর্থনীতি। দেশের ১০ কোটির মতো মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। আর এটি ডিজিটাল অর্থনীতির সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দিক। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুতগতিতে ডিজিটাল হচ্ছে।
জুনাইদ আহমেদ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে সরকার ইতিমধ্যেই ডিজিটাল অর্থনীতির তিনটি এজেন্ডা গ্রহণ করেছে। এগুলো হলো প্রযুক্তিদক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা, দেশের সব নাগরিককে ব্রডব্যান্ড সংযোগের আওতায় নিয়ে আসা এবং ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তোলা। মোবাইল ব্যাংকিং থেকে ডিজিটাল ওয়ালেটে রূপান্তরের কাজও শেষ পর্যায়ে। দেশের নারীরা ফ্রিল্যান্সিংয়ে উল্লেখযোগ্য হারে এগিয়ে আসছেন। তারুণ্য শক্তিই এই ডিজিটাল অর্থনীতির সবচেয়ে বড় শক্তি বলে তিনি উল্লেখ করেন।বৈঠকে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া মুনা তাসনিমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বাংলাদেশকে কীভাবে দেখছে, সে বিষয়টি ম্যাটের দৃষ্টিতে আনা হয়। তাঁকে জানানো হয়, অনলাইন শ্রমশক্তির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। সাশ্রয়ী শ্রমবাজার এবং মূলধনঝুঁকি এড়াতে যুক্তরাজ্যের আইটি কোম্পানিগুলোও বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে। মূলত, ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার পর দেশ এখন ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে হাঁটছে।
বৈশ্বিক বিভিন্ন অর্জন ও উপাত্ত তুলে ধরে বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একসময় কৃষির অবদান ছিল ৮০ শতাংশ। এখন দেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান মাত্র ১৯ শতাংশ। এরপরও বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। মেধা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে খাদ্য উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। আবার উৎপাদিত কৃষিপণ্য সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে এখন ব্যাপকভাবে ডিজিটাল মাধ্যম, মোবাইল পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহৃত হচ্ছে। ফেসবুকের মাধ্যমেও হাজার হাজার তরুণ গড়ে তুলছেন নিজেদের কর্মসংস্থান।
বৈঠকে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে অভাবনীয় বলে মন্তব্য করেন ম্যাট ওয়্যারম্যান। তিনি ডিজিটাল অর্থনীতি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতার করতে যুক্তরাজ্য সরকারর পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে স্টার্টআপ সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারস্পরিক যোগাযোগ ও মতবিনিময় করা, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বিষয়ে সক্ষমতা তৈরি করতে ইমার্জিং টেকনোলজি, আইওটি, বিগ ডেটা, ব্লক চেইন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ উদীয়মান প্রযুক্তি সম্পর্কে যৌথভাবে গবেষণা বিষয়ে উভয়ে একমত পোষণ করেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক ও ফিনটেক এরিয়াতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে যৌথভাবে সমঝোতা চুক্তির সম্পাদনের বিষয়ে একমত পোষণ করা হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আইসিটি বিভাগ দেশি-বিদেশি স্টার্টআপের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট’ ঘোষণা করেছে। এতে ব্রিটিশ স্টার্টআপও অংশগ্রহণ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়।