সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
সোমবার ● ২৫ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি জার্নাল » সোশ্যাল মিডিয়ার পরিমিত ব্যবহার
প্রথম পাতা » আইসিটি জার্নাল » সোশ্যাল মিডিয়ার পরিমিত ব্যবহার
২৩৩৬ বার পঠিত
সোমবার ● ২৫ নভেম্বর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সোশ্যাল মিডিয়ার পরিমিত ব্যবহার

---

একটা সময় ছিল যখন মানুষ ঘুম থেকে উঠে সকালের চা-নাশতা শেষ করেই পেপার পড়ত। তারপর কাজের প্রয়োজনে কিংবা সম্পর্কের খাতিরে চেনা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করত। এখন মানুষ চা-নাশতার টেবিলেই চা পান করে আর ফোনে হাত বুলায়। খবর নেয় সকল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে। শুধু যে সকাল বেলায় সোশ্যাল মিডিয়াতে চোখ বুলানো হয় তা কিন্তু নয়, দুপুর, বিকেল, রাতে কিংবা একটু অবসর সময় পেলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুঁ মারা হয়। এই সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি এত আকর্ষণ, তা কি কারণে হচ্ছে কখনও কি ভেবে দেখেছেন? এটা কি শুধুই যোগাযোগের মাধ্যম, নাকি বিনোদন করে সময় কাটানোর জায়গা?

সোশ্যাল মিডিয়া আমরা কেন ব্যবহার করি তার থেকেও জরুরী হলো আমরা কিভাবে এর ব্যবহার করি। যেমন, সোশ্যাল মিডিয়াকে কেউ কেউ ব্যবহার করে তাদের ব্যবসা প্রচারের জন্য। আবার পরিচিত লোকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করাসহ সবার খোঁজ-খবর রাখতেও ব্যবহার করে। যদি এটা হয়ে থাকে তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু এর বিপরীতও হয়ে থাকে অনেকের ক্ষেত্রে। অনেকেই আছে যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা একা বসেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় পার করে থাকে। এমন যারা করে তাদের জন্য অবশ্যই এটা ক্ষতিকর।

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করি। ব্যক্তিগত পোস্টের কথা ধরলে আমরা কোথায় যাচ্ছি, কি খাচ্ছি, কি কিনছি। মজার কোন ঘটনা এসবই তুলে ধরা হয়।

মোটকথা আমাদের ভাল লাগার ইতিবাচক দিকগুলোই আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে থাকি। পোস্টের বিনিময়ে আমরা লাইক, কমেন্ট শেয়ার পাই। এতে আমরা কিছুটা হলেও উৎফুল্ল হই। কিন্তু যারা পোস্টগুলো দেখে তাদের মধ্য থেকে অবস্থানগতভাবে খারাপ থাকা মানুষগুলো একটু হলেও হতাশায় ভোগে। অন্যের থেকে পিছিয়ে আছে, পিছিয়ে পড়ছে এসব ভেবে। আমেরিকার উইসকলিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জেফারি টি বাক এ বিষয়ে বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার সবাই নিজেকে ভালভাবে উপস্থাপন করে। অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে এবং সবাইকে দেখাতে চায় প্রতিদিন আমরা কি কি করি। এসব দেখেই খারাপ অবস্থানে থাকা মানুষগুলোর ভেতর একটা হীনন্মন্যতা কাজ করে। মনে মনে ভাবে নিজের জীবনমান ওদের থেকে অনেক খারাপ, যা পরবর্তীতে হতাশা বাড়ায়।

কিছু মানুষ আছে যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর পোস্ট করে থাকে। তাদের ভেতর কাজ করে যত পোস্ট তত লাইক, তত মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো। আপনি যদি অতিমাত্রায় সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে এক সময় তা নেশায় পরিণত হবে। ফলে আপনি স্বাভাবিকভাবে বাস্তব জগতের অনেক কিছু থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। মনে রাখবেন, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ আর সামনাসামনি সাক্ষাত এক নয়। সাক্ষাত যোগাযোগে যে গভীর সম্পর্ক হয় তা সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্ভব নয়।

অনেক সময় দেখা যায় ব্যস্ত রাস্তায় গাড়িতে কিংবা মানুষের ভিড়ে ফোনের দিকে আমাদের মনোযোগ থাকে। এই অভ্যাস কিন্তু খুবই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার মুখোমুখি করতে পারে আমাদের। এখনকার অভিভাবকদের তাদের সন্তানের প্রতি প্রথম অভিযোগই হলো সন্তানরা সারাক্ষণ ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আবার বড়দের অতিমাত্রায় ফোন ব্যবহারের প্রভাব ছোটদের ওপরও দেখা যায়। যে বয়সে মাঠে খেলতে যাবে সেই বয়সে তারা ঘরে ফোন নিয়ে পড়ে থাকে, যা শিশুর মানসিক বিকাশে বাধার সৃষ্টি করে। এসব বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী শেরি টারফেল বলেন, ‘স্মার্টফোন আমাদের সবাইকে এক সঙ্গে আলাদা করে ফেলেছে।’

জনপ্রিয় ফেসবুক মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এসব বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত। তিনি ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করেন মূলত যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য। কিন্তু সমাজে এর বিপরীত প্রভাবটাই বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। মানুষ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে একে অপরের থেকে।

মানুষ যত বেশি একে অপরের সঙ্গে কথাবার্তা বলে সময় কাটাবে তত বেশি সকলে ভাল থাকবে এমন চিন্তা মাথায় রেখে সোশ্যাল মিডিয়ার আবির্ভাব। কিন্তু আমরা তা না করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুধু সময় কাটানোর জন্য পড়ে থাকি সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার মানে হলো, বন্ধু-বান্ধবসহ পরিবারের সঙ্গে যেভাবে সময় কাটানো দরকার আমরা তা করছি না। আর এজন্যই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে একটা নিয়মে আসা দরকার আমাদের মঙ্গলের জন্যই। মনোবিজ্ঞানীরা সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার নিয়ে সব সময়ই বলেন, এটা যেন নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে ব্যবহার করা হয়।

অতিমাত্রায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দেয়ার কারণে আমরা একা হয়ে পড়ছি সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজার হাজার বন্ধু থাকার পরও। নেট সংযোগ বন্ধ হলেই হারিয়ে যায় সে বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্বের বিষয় নিয়ে এত সময় নষ্ট করার কি দরকার? তাই আমাদের উচিত সোশ্যাল মিডিয়ায় এত সময় না দিয়ে বাস্তব ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেয়া, সব সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় থেকে বাস্তব জগত বিচ্ছিন্ন না হয়ে পরিবারসহ বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবার সঙ্গে সাক্ষাত-যোগাযোগ বেশি বেশি রাখা।



পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি নিয়ে টেন মিনিট স্কুল ও বিকাশের উদ্যোগ
কনজিউমার প্রোটেকশন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে অপো বাংলাদেশ
মিডওয়াইফারি ডিপ্লোমা কোর্সে শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছে বিকাশ
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৪ হাজার শিক্ষার্থী পেল নতুন ল্যাপটপ
এনাবলার অব এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেলো মাস্টারকার্ড
জাইকার সহযোগিতায় বি-জেট ও বি-মিট প্রোগ্রামের সমাপনী প্রতিবেদন প্রকাশ
দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা সম্প্রসারণে ‘বেসিস জাপান ডে ২০২৪’
এআই অলিম্পিয়াডের বৈজ্ঞানিক কমিটির সদস্য হলেন বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. বি এম মইনুল হোসেন
সিআইপি সম্মাননা পেলেন উল্কাসেমির সিইও মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান
রিয়েলমি সি৭৫ পানির নিচে সচল থাকবে ১০ দিন