বুধবার ● ৬ জুলাই ২০১১
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য রপ্তানিতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা
ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য রপ্তানিতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা
চলতি ২০১১-১২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে নগদ সহায়তা না পাওয়ায় ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য রপ্তানিতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে করে টেলিভিশন, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল এবং এয়ারকন্ডিশনারসহ অন্যান্য ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রপ্তানি বন্ধ হলে কারখানা বন্ধসহ নতুন কর্মসংস্থানেও ঝুঁকি বাড়বে বলে মনে করছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।
জানা গেছে, বিভিন্ন রপ্তানি পণ্যের ওপর সরকার নগদ সহায়তা দিয়ে থাকে। চলতি বাজেটেও কিছু কিছু পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে নগদ সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু সরকার ইলেক্ট্রনিক্স ও অটোমোবাইল পণ্যে নগদ সহায়তা না দেয়ায় উদ্যোক্তাদের লোকসান দিয়েই রপ্তানি করতে হচ্ছে। ফলে যেকোন সময়ে বাংলাদেশ থেকে এ ধরনের পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিংয়ের ম্যানেজার লোকমান হোসেন আকাশ বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত অটোমোবাইল এবং ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য রপ্তানিতে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ নগদ সহায়তা দিয়ে থাকে। একই সঙ্গে চায়নাতে এ হার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। অপরদিকে বাংলাদেশে এ শিল্পের বিকাশ ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সরকার উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উদ্যোক্তাদের নগদ সহায়তা পাওয়ার দাবিও পূরণ করা হয়নি। ফলে এ খাতের ২ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগী দেশ হচ্ছে ভারত, থাইল্যান্ড এবং এবং চীন। পণ্য উৎপাদন এবং এই জাতীয় শিল্পের অবকাঠামো সুবিধা থাকায় এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে নগদ সহায়তা পাওয়ায় প্রতিযোগী দেশগুলো বিশ্ববাজারে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে এসব পণ্য রপ্তানি করতে পারছে। অন্যদিকে, এ ধরনের সহায়তা না পাওয়ায় দেশীয় উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে।
এদিকে, ইলেক্ট্রনিক্স ও অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের প্রধান উদ্যোক্তা ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লি. রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ নগদ সহায়তা চেয়ে অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাংলাদেশ রেফ্রিজারেটর ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআরএমএ) বরাবর আবেদন করেছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি সহায়তা ছাড়া এই শিল্পের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব নয়। এছাড়া মূল্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে সরকারের তরফ থেকে রপ্তানিতে নগদ সহায়তাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান জরুরি হয়ে পড়েছে। সরকারের তরফ থেকে নগদ সহায়তা পেলে দেশি উৎপাদনকারীরা টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও মোটরসাইকেল ছাড়াও ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, ডিভিডি, গাড়ি প্রস্তুত এবং তা রপ্তানি করতে উৎসাহী হবে। অন্যদিকে, নগদ সহায়তা না পেলে নতুন এই সম্ভাবনাময় খাত ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়বে। ভবিষ্যতে কেউ আর এ খাতে বিনিয়োগেও উৎসাহী হবেন না। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অতএব, অতি দ্রুত রপ্তানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়ছে।