মঙ্গলবার ● ২৬ জুন ২০১২
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আউটসোর্সিং ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা
আউটসোর্সিং ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা
অনলাইন আউটসোর্সিং সম্পর্কিত প্রতারণাপূর্ণ কর্মকান্ড সম্পর্কে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফ্টওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর উদ্যোগে ২৪ জুন ২০১২, রবিবার, বেসিস বোর্ড রুমে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বেসিস সভাপতি মাহবুব জামান তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, অনলাইনে অর্থ উপার্জন তথা অনলাইন আউটসোর্সিং এর নামে অসংখ্য তরুণ ছাত্র ও যুব সম্প্রদায়কে নানামুখি প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সংগঠন প্রশিক্ষণের নামে প্রতারণা করছে। এসকল কর্মকান্ডে অমিত সম্ভাবনাময় দেখা দিয়েছে।
সফ্টওয়্যার ও আইটি শিল্পের জাতীয় বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে বেসিস এ ব্যাপারে এই বিপুল সংখ্যক যুব সম্পদকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করার তাগিদ অনুভব করছে। আর এ কারণেই স্বল্প সময়ের নোটিশে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বেসিস সভাপতি আরো বলেন, বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি যথেষ্ট বিকাশ লাভ করেছে। আমাদের দেশে বর্তমানে শুধু ফেইসবুক গ্রাহকের সংখ্যা ৩০ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি অনলাইনে ঘরে বসে অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সংগঠন দেশজুড়ে নানান প্রশিক্ষণ ও কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। এই প্রতারণামূলক কর্মকান্ডে কিছু মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা এমএলএম কোম্পানিও জড়িত রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ইতোমধ্যে অনেকে এই প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে বিভ্রান্ত ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কয়েকজন ভুক্তভোগী তরুণ ছাত্র তাদের হয়রানির কথা তুলে ধরেন। অপরদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন ছাত্র-ছাত্রী আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনে তাদের সফলতার কথা তুলে ধরেন।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বেসিস নেতৃবৃন্দ জানান যে, দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় ও তার আশেপাশের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে অনলাইন আউটসোর্সিং বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনাসহ এ ব্যাপারে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন ২০১২ তে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম আউটসোর্সিং বিষয়ক অবহিতকরণ কর্মশালা আয়োজন করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ধরনের কর্মশালা আয়োজন করা হবে বলে বেসিস সভাপতি জানান।
বেসিস সরকারের সাপোর্ট টু ডিজটাল বাংলাদেশ (এটুআই) এর সাথে যৌথভাবে অনলাইন আউটসোর্সিং এর প্রাথমিক ধারণা প্রদানের পাশাপাশি ওডেস্ক, ইল্যান্স বা ফ্রিল্যান্সার এর মত আন্তর্জাতিক আউটসোর্সিং জব পোর্টাল-এর জন্য উপযুক্ত ৩৫-৪০ টি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। বেসিস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি এন্ড ম্যানেজমেন্ট (বিআইটিএম) এর নিয়মিত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এসব প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে বলে বেসিস নেতৃবৃন্দ জানান।
তথাকথিত আউটসোর্সিং-এর নামে ডুলেন্সার, স্কাইল্যান্সার ইত্যাদি নামে দেশীয় কিছু সাইট ব্যবহার করে ‘পে পার কিক’ এর কথা বলে একাউন্ট তরুণদের এককালীন সাতশো থেকে সাত হাজার টাকা দিয়ে একাউন্ট খুলে এসব সাইট থেকে কোনো অর্থ উপার্জনের পরিবর্তে বরং প্রতারিত এবং হয়রানির শিকার হচ্ছে। অনলাইন আউটসোর্সিং যদিও আমাদের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি অমিত সম্ভাবনাময় একটি খাত। ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এই অমিত সম্ভাবনাময় খাত যেন গুটিকয়েক অসৎ মানুষের জন্য অশনি সংকেত হিসেবে দেখা না দেয় সে ব্যাপারে সকলকে বিশেষ সতর্ককতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন বেসিস সভাপতি।
অনলাইন আউটসোর্সিং এর ব্যাপারে তরুণ সম্প্রদায়কে সচেতন করতে বেসিস নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের বিশেষত: প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
অনলাইন আউটসোর্সিং-এর ব্যাপারে চলমান এসব প্রতারণামূলক কার্যক্রমের ব্যাপারে জনসচেতনতা তৈরিতে বেসিস আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বেসিস-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ফাহিম মাশরুর এবং যুগ্ম মহাসচিব তামজিদ সিদ্দিক স্পন্দন।