সর্বশেষ সংবাদ
ঢাকা, নভেম্বর ৫, ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১
ICT NEWS (আইসিটি নিউজ) | Online Newspaper of Bangladesh |
বৃহস্পতিবার ● ৩ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » আইসিটি জার্নাল » আগামী দিনের বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
প্রথম পাতা » আইসিটি জার্নাল » আগামী দিনের বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
১১১৮ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৩ অক্টোবর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আগামী দিনের বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

---
চোখের পলকের গতির চেয়ে বেশি জোরে চলে সোস্যাল নেটওয়ার্ক। যে প্লাটফর্মেই আপনি যাবেন সেখানেই আপনি কে, আপনার আচরণ কেমন, আপনি কি ভাবেন, কি চান, আপনার মনের মধ্যে কি কিলবিল করছে, মনটি কতটা পরিচ্ছন্ন, কতটা সাদা- সব ঠিকুজি আবেগ ও অবচেতনে প্রকাশ করে দিচ্ছেন অজান্তেই। ওয়েব ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ আপনাকে পরখ করে চিনতে ও বুঝতে পারছে। বিশে^র কোটি কোটি মানুষের মনের ভেতরের সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে নিচ্ছে ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজন্স। আগামীর পৃথিবী এই ইন্টেলিজেন্সের। প্রাচীন মোটর গাড়ি কোম্পানি ‘রোলস রয়েস’ সোস্যাল নেটওয়ার্কের আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রয়োগ করে এমন একটি গাড়ি উদ্ভাবন করেছে যা চলবে আপনার মনের কথায়। গাড়িটি বাজারে আসবে ‘৩৫ সালে। এমন ঘোষণা দিয়েছে রোলস রয়েস। তারা বলছে আপনি কোথাও যেতে চাইলে দরজা খুলে যাবে। আপনি স্টিয়ারিংয়ে বসেই মনের কথায় গাড়ি চালাবেন। অবাক হচ্ছেন! হওয়ারই কথা। আপনি অবাক হলেও ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ই ঠিক করবে আগামীর বিশ্বকে!

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনি ছবি, স্টেটাস পোস্ট করেন। তখন কি ভাবেন পোস্টের লেখা ও ছবি কি অর্থ বহন করবে। মনে এলো, ভাল লাগল, ব্যস, দিলেন পোস্ট করে। তারপর লাইক, কমেন্টস শেয়ারের পালা। এগুলো শুধু আপনিই পড়ছেন ও দেখছেন না। আপনার অজান্তে এগুলো মার্ক করে রাখছে সোস্যাল নেটওয়ার্ক। যারা কমেন্টস দিচ্ছেন তাদের লেখা ও ইমোজি (প্রতীকী চিহ্ন) দেখে আপনি বুদ্ধিমান হলে বুঝতে পারবেন-এর মধ্যে কতটা স্তুতি আর স্তাবকতা আছে। তা বোঝার ক্ষমতা যদি না থাকে তাহলে অবচেতনে আপনার মনে ঢুকবে এক ধরনের অহংবোধ। আপনি যা নন তাই ভাবতে শুরু করবেন! এই অহমিকা আপনার জীবনকে এলোমেলো করে দিতে পারে। কারণ সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার আগে সৃষ্টিশীলতা, সৃজনশীল চিন্তাধারাকে আপনি সরিয়ে রেখেছিলেন। সুপ্ত ভাবাবেগ আপনাকে অন্যপথ দেখিয়েছে। এমন পোস্টে সোস্যাল মিডিয়ার মেধাবী বন্ধুরাও আপনার সম্পর্কে একটা ধারণা পেতে পারে। অবচেতনে আপনি নিজেকে প্রকাশ করে দিলেন। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আপনার সুপ্ত আবেগ আপনার অবচেতনে বের করে আনে। আর অবচেতন মন কখনও মিথ্যা বলে না।
লোকের ধারণা মনোবিজ্ঞানীরা (সাইকোলজিস্ট) মানুষের মনের ভেতরে ঢুকতে পারে। কথাটি মোটেও ঠিক নয়। আপনার আচরণ, কথাবার্তা, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ আর আবেগ থেকে বের হয়ে আসা কোন কথা বিশ্লেষণ করে মনোবিজ্ঞানীরা আপনার ভেতরটা বুঝতে পারেন। আবার মনোবিজ্ঞানী না হয়েও অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধিতে (কেউ কেউ বলেন, ঐশ^রিক ক্ষমতা) আপনাকে বুঝতে পারে। ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ মনোবিজ্ঞানীর মতো সোস্যাল মিডিয়ায় আপনার পোস্ট ও ছবি সর্বক্ষণ বিশ্লেষণ করছে। এই থেকে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ পেয়ে যাচ্ছে আপনার মনের খবর। বিজ্ঞানের আশীর্বাদকে স্বাগত জানিয়েও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাবধান করে বলেছিলেন, ‘বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ।’ … সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কোন ফাঁকে আপনার মনের অজান্তেই চুরি করে নিয়েছে আপনার ভাগাবেগ, আপনার সৃষ্টিশীল ও মননশীল সুকুমার বৃত্তিগুলো আপনি জানেনও না। আপনার গান শোনা, ক্যামেরায় ছবি তোলা, বই পড়ার সৃষ্টিশীলতা ইতোমধ্যেই হ্যাকড হয়ে গেছে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ কারণে। অথচ আপনি এসব চাননি। আপনি না চাইলেও ওরা আপনাকে রেহাই দেবে কেন…।

সোস্যাল নেটওয়ার্কের ‘ফেসবুক’ প্লাটফর্মের যাত্রা ২০০৪ সালে জাকারবার্গসহ কয়েক মার্কিন শিক্ষার্থীর পাঠ্যক্রমে একে অপরের সহযোগিতার কম্পিউটার ডিভাইস তৈরির মধ্যদিয়ে। এরপর পুরোটাই ফেসবুকের ইতিহাস। বসে থাকছে না সার্চইঞ্জিন ‘গুগল’। এই গুগল সৃষ্টি করেছে দুই কলেজ শিক্ষার্থী ল্যারি পেজ ও সেন্সেই ব্রিন। তারা ওয়েবপেজগুলো যুক্ত করল। ২০০১ সালে চালু হলো গুগল ইমেজ সার্চ। ২০০৪ সালে গুগল মেল (জি-মেল) সেবা। গুগলের পিঠে চড়ে এমন কোন স্থান নেই যেখানে যাওয়া যাবে না। গুগল ইউটিউব কিনে নেয়ার পর ঘটল আরেক বিপ্লব। ফেসবুকের আন্তঃযোগাযোগে প্রবেশ তাদের মেসেঞ্জার প্লাটফর্ম দিয়ে। সোস্যাল নেটওয়ার্কের সঙ্গে পাল্লা দিতে যোগ হয় হোয়াটস এ্যাপ, টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ কয়েকটি প্লাটফর্ম।

আপনি কোন প্লাটফর্মে ঢুকবেনÑ কিছুক্ষণ বসবেন। নেটওয়ার্কের ফুরফুরে বাতাস গায়ে মেখে আপ্লুত হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আলাপনে মেতে উঠবেন। ‘মায়াবি হরিণ’ অদৃশ্যেই আপনার পাশে বসবে। এরপর হৃদয়ে ছোঁয়া দিয়ে আপনাকে নিয়ে যাবে গভীর ভাবাবেগ আর কল্পনার রাজ্যে। নিজেকে সমর্পণ করবেন। অগোচরে নিজেকে উপস্থাপন করবেন। মেলে ধরবেন আপনি কে, আপনার মনের মধ্যে কিসের বসবাস! মনটি কি বলে…ইত্যাদি নানা কিছু। সরাসরি না বললেও আপনার অন্তরের কথা যা আপনার মূল্যবান সম্পদ তা বুঝে নেবে নেটওয়ার্কের ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’।
মানুষের সুস্থ চিন্তা-চেতনা, সৃষ্টিশীলতা, সৃজনশীল ভাবনা, মনের সৌন্দর্য যেভাবে বিকশিত হওয়ার কথা তা আর থাকছে না। মনের এই দিকগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত থাকছে। বাংলাদেশে যত ফেসবুক, হোয়াটস এ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম টুইটার ব্যবহারকারী আছেন তার মাত্র ১৫ শতাংশের পোস্টে থাকে মননশীল সৃজনশীল সৃষ্টিশীল ভাবনা অবচেতন মনের ছবি। হালে নিউজ ফিড ও নিউজ স্ট্রিমিং আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এর পাশাপাশি আপনাকে পরিমাপ করার নেটওয়ার্কিং ইন্টেলিজেন্সও আপডেট হচ্ছে। গুগল সার্চে গিয়ে আপনি জ্ঞানের কথাসহ বিশে^র যা কিছু ভাল জানতে চাইবেন তা ছবিসহ জানাবে। গুগলে উইকিপিডিয়া যুক্ত হয়েছে। আবার যা মন্দ তাও জানাবে। ইউটিউবের কাছেও যা শুনতে ও দেখতে চাইবেন তা মুহূর্তেই তুলে ধরবে। আপনার এই জানার, শোনার, দেখতে চাওয়ার মধ্যেই আপনাকে পরখ করার পথে নেমে পড়বে ইন্টেলিজেন্স। যেমন আপনি একটি মেলোডি গান ও ভাল ছবি শুনতে ও দেখতে চাইলেন। মুহূতেই একই ধরনের বেশকিছু গান ও ছবির অংশ আপনাকে দেখাবে, ইনসিস্ট করবে। খারাপ কিছু দেখতে কিংবা শুনতে চাইলে তাও দেখাবে। আপনি কতটা সময় দেখেন ও শোনেন তাও মাপবে। মন্দ কিছু দেখে ও শুনে এ্যাবিউজের ফাঁদে আটকে গিয়ে আপনি অজ্ঞাতেই নিজেকে প্রকাশ করে দিচ্ছেন। আর তা খপ্ করে ধরে ফেলছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।

উন্নত দেশগুলো এসব বিষয় জেনে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সোস্যাল মিডিয়ার যথেচ্ছ ব্যবহার কমেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্মার্টফোনের ব্যবহারও কম। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার জন্য ওয়াইফাই সংযোগে নেটে পাঠ্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মেধাবীরা লেখাপড়ার সময় ঠিক রেখে বাড়তি সময় বের করে সপ্তাহে দু’একদিন নেটে বসে। সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তারা অফিস সময়ের পরে অবসরে সামাজিক মাধ্যমে (ফেসবুক টুইটার গুগল) স্বল্প সময়ের জন্য ঢোকেন।

অথচ বাংলাদেশে দেখা যায় ফেসবুকে যাদের আসক্তি পেয়েছে তারা প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩ ঘণ্টা এর পেছনে অপচয় করেন। প্রজন্ম নিয়ে যে ভয় ছিল তা আর নেই। বর্তমানের শিক্ষার্থীরা খুব কম ফেসবুক ব্যবহার করে। মেডিক্যাল ও প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা নেটে বসে লেখাপড়ার জন্য। সাধারণত ৩৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদেরই ফেসবুকের আসক্তি বেশি। ব্যক্তিগত অধ্যায় থেকে মনের ভেতরের নানা অধ্যায়, প্রফেশনাল কলিগ থেকে সামষ্টিক-ফেসবুক বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে। ছবি ও সেলফি তো আছেই।

ফেসবুকের উদ্ভাবকরা (সেই কয়েক বন্ধু) ‘১৩ সালে অনুভব করে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় তাদের সৃষ্টির অপব্যবহার হচ্ছে। তখনই তারা ফেসবুককে নিয়ন্ত্রণে নেয়, যা অব্যাহত আছে। ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ টেকনোলজি নিয়ে কাজ করছে। সাইট ফ্লিকার বানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে গত সাধারণ নির্বাচনে ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার অন্যতম কারণ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স। কেম্ব্রিজ এ্যানালিটিকা ফেসবুকের কাছ থেকে মার্কিন ভোটারদের পছন্দ-অপছন্দের বিষয় জেনে ট্রাম্পকে জানায়। ট্রাম্প পছন্দের বিষয় জেনে তা পূরণের আশ^াস দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ফেসবুক ক্ষমা চায় এবং এ ধরনের কাজ বন্ধের অঙ্গীকার করে। নিক্সনের ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি ছিল গোপনে টেলিফোন ট্যাপিং। ট্রাম্পের আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ভোটারদের মনের ভেতরে ঢুকে তা প্রকাশ করে দিয়েছে ট্রাম্পকে। নিক্সনের ‘ওয়াটার গেট’ কেলেঙ্কারি হলেও ট্রাম্পের ‘ইন্টেলিজেন্স’ কেলেঙ্কারি ছড়ায়নি। মানুষ অবচেতনেই তার মনের ভেতরের মূল্যবান সম্পদ প্রকাশ করে দিচ্ছে। এই সম্পদকেই বের করে এনে তুলে দিচ্ছে বিশ^ মোড়লদের ও আর আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের হাতে। অতএব-সাধু সাবধান!



পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
১১-২১ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে দারাজ ১১.১১ ক্যাম্পেইন
এশিয়ার অন্যতম সেরা কর্মস্থলের স্বীকৃতি পেল ফুডপ্যান্ডা বাংলাদেশ
অপো বাংলাদেশের ১০ম বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অফার
বিশ্বসেরা ১০০ ব্র্যান্ডের তালিকায় শাওমি
শাওমি ইমেজারি অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ শুরু
দেশে চীনের আইমা ব্র্যান্ডের মোটরবাইক
অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে ড. মনির ভূঁঁইয়া’র বিদেশে পড়ালেখা বই
আমি প্রবাসীর অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য: দক্ষ কর্মী অভিবাসনে একাউন্টেন্টদের চমক
প্রতিমাসে দেশের অর্ধেক শিল্প প্রতিষ্ঠান নেটওয়ার্ক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে: ক্যাসপারস্কি
‘প্রয়াস’ এর সাথে বাংলালিংকের ‘উইমেনটর এক্সপেরিয়েন্স ডে’ আয়োজন