সোমবার ● ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » বুধবার বাণিজ্যিকভাবে উদ্বোধন করা হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১
বুধবার বাণিজ্যিকভাবে উদ্বোধন করা হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ বাণিজ্যিকভাবে উদ্বোধন করা হবে আগামী বুধবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে স্যাটেলাইটের সম্প্রচার কার্যক্রম উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এই দিন থেকেই দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার শুরু হবে। গত তিন মাস চুক্তিবদ্ধ চ্যানেলগুলো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে ফ্রি ফ্রিকুয়েন্সি নিয়ে সম্প্রচার কাজ চালিয়েছে। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে উদ্বোধনের দিন থেকে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডকে (বিসিএসসিএল) ভাড়া দিতে হবে। একই দিন থেকে বিদেশী স্যাটেলাইটের চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। যদি কোন চ্যানেল বিদেশী স্যাটেলাইটের সঙ্গে চুক্তি রাখতে চান তাহলে বিটিআরসির অনুমোদন লাগবে। কারণ ফ্রিকুয়েন্সির মালিক বিটিআরসি। বিটিআরসির অনুমোদন ছাড়া ব্যাকআপ হিসেবে বিদেশী স্যাটেলাইটের সঙ্গে চুক্তি রাখতে পারবে না। এরপরও যদি কোন চ্যানেল বিদেশী স্যাটেলাইটের সঙ্গে চুক্তি রাখে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি।
বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডকে (বিসিএসসিএল) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহজাহান মাহমুদ জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে আগামী ৩ অক্টোবর বুধবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে স্যাটেলাইটের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। তারপর থেকেই কোম্পানিটি আয়ের পথে চলে যাবে। এত দিন আমরা বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলকে ফ্রি ফ্রিকুয়েন্সি দিয়েছি। এখন পর্যন্ত স্যাটেলাইট কোম্পানির সঙ্গে ২০ বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল ও তিনটি সরকারী চ্যানেল চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বাকি আরও ১০ টেলিভিশন চ্যানেল চুক্তিবদ্ধ হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। উদ্বোধনের আগেই আরও কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল চুক্তিবদ্ধ হতে পারে। এখন পর্যন্ত সম্প্রচারের জন্য স্যাটেলাইট কোম্পানি কোন ভাড়া নির্ধারণ করেনি। কারণ ফ্রিকুয়েন্সির মালিক বিটিআরসি। তারাই আসলে সম্প্রচারের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করবে। তবে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যে দরে বাইরে থেকে ব্যান্ডউইথ কেনে তার থেকে কম দামে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে পারবে। আমরা টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে তিন মাস ফ্রিকুয়েন্সি ফ্রি দিয়েছি। বিসিএসসিএল কোম্পানির চেয়ারম্যান বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে দেশের সব টেলিভিশন ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা করা হবে। এখন থেকে আর বিদেশী স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভশীল হতে হবে না। ইতোমধ্যে বিদেশের কাছেও স্যাটেলাইটের বেশ কয়েকটি ট্রান্সপন্ডার ভাড়া দেয়া হয়েছে। দেশের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ও স্যাটেলাইট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে। দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ডিজিটাল বাংলাদেশের অপূর্ণতা দূর করবে। এখন সাশ্রয়ী মূল্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার এবং ব্যাংকগুলো ব্যাংকিং সেবা দিতে পারবে। দেশের ভেতরেই স্যাটেলাইটের অনেক বড় চাহিদা রয়েছে। এই চাহিদা পূরণ করতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়াররাই স্যাটেলাইট পরিচালনা করতে পারবেন। গাজীপুরে প্রায় ১৩ একর জায়গার ৫ একর জুড়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেখানে বিদেশী প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০ ট্রান্সপন্ডার রয়েছে, যার ২০টি বাংলাদেশ ব্যবহার করবে। বাকি ২০টি বিদেশী বা প্রতিবেশী দেশের কাছে ভাড়া দেয়া হবে। বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) সঙ্গে যমুনা টিভি, সময় টিভি, দীপ্ত টিভি, বিজয় টিভি, বাংলা টিভি ও মাই টিভি এবং সোনালী ব্যাংক স্যাটেলাইটের সেবা নেয়ার জন্য সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এর আগে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, সময় টিভি, ডিবিসি নিউজ, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি, এনটিভি, একাত্তর টিভি, বিজয় বাংলা ও বৈশাখী টিভি। বাকি টেলিভিশনগুলোও দু’একদিনের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ হবে বলে জানানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ক্ষমতার ৪২ শতাংশ এরই মধ্যে ব্যবহার শুরু হয়েছে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সম্প্রচারে এলে সাটেলাইটের ব্যবহার আরও বেড়ে যাবে। এমন তথ্য জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল)। তারা বলছে, গত বছর মে মাসে বঙ্গবন্ধু-১ এর যাত্রা শুরু করার পর মাত্র দেড় বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ক্ষমতার এতটা ব্যবহার করে ফেলা নিঃসন্দেহে বড় একটি অর্জন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট টেলিভিশন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমেই তাদের সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাছাড়া ডিটিএইচ কোম্পানি আকাশও বঙ্গবন্ধু-১ এর কাছ থেকে ছয়টি ট্রান্সপন্ডার ভাড়া নিয়েছে। এর বাইরে বেশ কয়েকটি ব্যাংকও বিসিএসসিএল’র সঙ্গে চুক্তি করেছে।