রবিবার ● ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ডিজিটাল বাংলা » তথ্য অধিকার নিশ্চিতে দেশে জনসচেতনতা বাড়াতে হবেঃ প্রধান তথ্য কমিশনার
তথ্য অধিকার নিশ্চিতে দেশে জনসচেতনতা বাড়াতে হবেঃ প্রধান তথ্য কমিশনার
দেশে সবার তথ্য অধিকার নিশ্চিতে আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। অনেক কাঠখড় পোহাতে হবে। এ বিষয়ে যে আইন তৈরি হয়েছে তা প্রয়োগে সারাদেশে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে বলে মনে করেছে খোদ তথ্য কমিশন। শনিবার আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংস্থার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমেদ বলেন, দেশে সবার তথ্য অধিকার এখনও নিশ্চিত হয়নি। তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে কমিশনের একার পক্ষে সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন। ব্যাপক পরিসরে না হলেও ছোট পরিসরে এই দিবস পালনে ব্যবস্থা নেয়া হয় কমিশনের পক্ষ থেকে। আজ রবিবার দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা, র্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তথ্য কমিশন থেকে জানানো হয়েছে শাহবাগ থেকে এই র্যালি বের করা হবে। এছাড়া জাতীয় জাদুঘরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা শেষে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।
‘তথ্য সবার অধিকার: থাকবে না কেউ পেছনে আর’ প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রতিবারের ন্যায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে। তথ্য জানার অধিকারের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতেই মূলত এই দিবস পালন করা হয় ২০১৫ সালে ইউনেস্কোর নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম তথ্য অধিকার দিবস পালন করা হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা বিস্তৃত হওয়ায় ডিজিটাল বৈষম্যের কারণে কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে, এ বছর সে বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে ইউনেস্কো। দিবস পালন উপলক্ষে সরকারী ও বেসরকারীভাবে নানা কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে।
তথ্য অধিকার দিবসে দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, তথ্য অধিকার আইন একটি জনকল্যাণকর আইন। দেশের সব পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সব স্তরে দুর্নীতি দূরীকরণের একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে তথ্য অধিকার আইনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার অধিকার বিশ্বব্যাপী একটি মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। জনগণের তথ্য জানার অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় বিভিন্ন সুবিধা ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় ৫ হাজার ২৮৬ ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তোলার মাধ্যমে তথ্যসেবা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আরও বলেন, তথ্য সুরক্ষা আইন ও বিধিমালা রয়েছে। যারা তথ্য দেবেন, তারা এই আইনের মাধ্যমেও সুরক্ষা সেবা পেতে পারেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগম বলেন, দেশে আজকের যে উন্নয়ন, সেটি তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে। উন্নয়নের যে ধারা শুরু হয়েছে, সেটি যেন অব্যাহত থাকে। প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ সাইফুল আলম বলেন, যখন অগণতান্ত্রিক সরকার আসে তখনই বলা হয়, এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না। তারা অবাধ তথ্য প্রবাহকে ভয় পায়। সেটি তাদের কর্মকা-েই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আমরা গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে সবসময়ই চাই, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত হোক। সাক্ষী সুরক্ষা আইনের মতো তথ্যদাতার সুরক্ষায় আইন প্রণয়নেরও সুপারিশ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মিজান-উল-আলম, তথ্য কমিশনের সচিব মোঃ তৌফিকুল আলম, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকারসহ কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।